কল্পতরুর মেলা - প্রতীককুমার মুখার্জি Kalpatarur Mele pdf by Pratikkumar Mukharjee
সস্তা স্টিলের খাবারভর্তি থালাটা উড়ে গিয়ে আছড়ে পড়তেই, লালচে ঝোলমাখা ভাতের সঙ্গে ইলিশের মাথাগুলো ছড়িয়ে গেল নোনাধরা কলতলাটায়। অস্বস্তিকর আওয়াজটা মেলাবার আগেই দুম দুম পায়ের শব্দ তুলে, ফুট চারেকের একটা রাগী শরীর ফুটিফাটা উঠোনটা পেরিয়ে ঢুকে পড়ল ঘরের ভিতর। রাগ বা অভিমানের চাইতেও বেশি অবাক হয়ে, নির্নিমেষে ঘরের দিকে তাকিয়ে থাকল রেবা। কত চেয়েচিন্তে রায়বাড়ি থেকে অসময়ের ইলিশের মাথা জোগাড় করেছিল সে। রান্না করেছিল রত্নর জন্য যত্ন করে। হাসিমুখে খেতেও বসেছিল সে, ভাত মাখতে মাখতে বলেছিল, ‘বসে যাও মা, একসঙ্গে খেয়ে নিই,' বলে বাঁ-হাতে হাঁড়ি থেকে মায়ের ভাত বাড়তে লেগেছিল। তারপরেই মাছের কড়াইটায় শুধু তলানি ঝোল পড়ে থাকতে দেখে, দশবছরের মুখটা কঠিন হয়ে উঠল, 'আমার পাতে তিনটে মুড়ো, আর তুমি ঝোলভাত? মজা হচ্ছে? দয়া দেখাচ্ছ আমাকে?” রেবা গুছিয়ে কিছু বলে ওঠার আগেই, থালা সটান গিয়ে ছিটকে পড়ল কলতলায়। রতুর রাগ চণ্ডাল! মনমতো না হলেই মেজাজ সপ্তমে, তখন তার চালচলনের সঙ্গে তার বয়স মাপা দুষ্কর। 'ভুলটা আমারই,' ভাবতে ভাবতে নোংরা শ্যাওলামাখা নষ্ট খাবার ঝেটিয়ে জড়ো করতে থাকে রেবা। সে ভেবেছিল ছেলে হয়তো একটু রাগ করবে, তারপর জোরাজুরি করে তার থেকে একটা মাছ তুলে দেবে মাকে। ব্যাপারটা এতদূর গড়াল শুধুমাত্র রতুর বাবার কথা ওঠায়। মশলাপাতি গোছাতে গোছাতে রেবা বলেছিল, 'আসানসোলের মেলায় তোর বাবার ডিউটি পড়েছে, দু-মাস পর থেকে কল্পতরুর মেলা বসবে বড়জোড়ায়! দেখতে যাব, কেমন ? হয়তো বাবার কথা শুনেই মাথা গরম হচ্ছিল ছেলের, ঘৃতাহুতি হল মায়ের পাতে মাছ না দেখে ।
কল্পতরুর মেলা - প্রতীককুমার মুখার্জি pdf download করুন এখান থেকে। এছাড়াও সকল লেখকদের তালিকা একনজরে দেখুন এখানে। boibanglo.blogspot.com বই পড়ার প্রতি আগ্রহ তৈরিই করার লক্ষ্যে নেটে পাওয়া কিছু pdf শেয়ার করে।